জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নীতিমালা মেনে চলে বলে হামাসকে জঙ্গিগোষ্ঠী বলে মনে করেন না ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা। গতকাল শনিবার রাজধানীর প্লানালতো প্রেসিডেন্ট ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদন অনুসারে, লুলা দা সিলভা বলেছেন, হামাস গাজা উপত্যকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং জিতেছেও।
লুলা বলেন, ‘ব্রাজিলের অবস্থান স্পষ্ট। ব্রাজিল শুধু তাদেরই জঙ্গি সংগঠন মনে করে যাদের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ জঙ্গি সংগঠন মনে করে। আর হামাসকে এ পরিষদ জঙ্গি সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে না।’
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে ‘জঙ্গি সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
প্রেসিডেন্ট লুলা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কাছে এখন আমাদের চাওয়া হলো—গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ সমাপ্তি। মনে হচ্ছে, নেতানিয়াহু ভুলে গেছেন, গাজায় শুধু হামাস সেনারাই নয়, নারী ও শিশুরাও আছেন। তাঁরাই এ যুদ্ধের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী।’
লুলা দা সিলভা শান্তির পক্ষে তাঁর দেশ ব্রাজিলের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, ‘এ মুহূর্তে বন্দুকের জোর থেকে সরে এসে সংলাপের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমি শান্তি নিয়ে কথা বলে যাব। সংলাপের ক্ষমতা ও প্রভাব মানুষের তৈরি যেকোনো শক্তিশালী বোমা থেকেও বেশি।’
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে লুলা গাজায় আটকে থাকা ব্রাজিলের নাগরিকদের উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একজন ব্রাজিলিয়ানকেও গাজা উপত্যকায় রাখব না। আমরা সবাইকে খুঁজে বের করব, কারণ এটাই ব্রাজিল সরকারের দায়িত্ব।’
এর আগে চলতি সপ্তাহে ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় সরকার হামাসকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে স্বীকার না করার কারণ উল্লেখ করে একটি বিবৃতি দেয়। হামাসকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করতে ব্রাজিল সরকারের ওপর ক্রমশ পশ্চিমা চাপ বাড়ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ব্রাজিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিধিমালা মেনে চলে। কোনো দল জঙ্গি সংগঠন কি না তা চিহ্নিত করা এ পরিষদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। জাতিসংঘের আর্টিকেল ২৪ অনুসারে, আল কায়েদা ও বোকো হারামের মতো হামাস কোনো জঙ্গি সংগঠন নয়।