যাপিত কোলাহলের রঙ মেখে
ভ্রামণিক চোখ শুধু দেখে আর শেখে….
শিল্প-সাহিত্যের তীর্থভূমি ফ্রান্সে যখন পা রাখলাম এক অন্যরকম শিহরণ অনুভূত হলো হৃদিমূলে। পঞ্চম ফরাসি প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি জেনারেল শার্ল দ্য গোল (Charles de Gaulle) এর নামে নির্মিত বিমানবন্দরের স্থাপত্যশৈলী শুরুতেই মুগ্ধ করলো। “প্রত্যেক শিল্পীরই দু’টি দেশ আছে একটি হলো যেখানে সে জন্ম নেয়, আর অন্যটি হলো ফ্রান্স” কথাটি যে মিথ্যে নয় তা টের পেলাম শহরে প্রবেশ করে। কেমন যেনো আপন আপন আবহ বিরাজমান মনজুড়ে, নিজেকে একটুও আগন্তুক মনে হচ্ছে না পা রেখে এই শৈল্পিক শহরে। ছবির দেশ, কবিতার দেশকে এবার কোনো গল্প উপন্যাস কিংবা সিনেমার পর্দায় নয়, নিজ চোখে দেখে নেবার পালা…।
সাহিত্যে সর্বপ্রথম নোবেল জয়ী রনে ফ্রঁসোয়া আরম (সুলি) প্রুদোমের দেশে, সাহিত্যিক ও অধ্যাত্মবিদ রোম্যাঁ রোলাঁর দেশে, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী মতবাদের প্রবক্তা অঁদ্রে পোল গিইয়োম জিদের দেশে, বিংশ শতকের ফরাসি দর্শন ও মার্ক্সিজমের অন্যতম প্রভাবশালী দার্শনিক জঁ-পল সার্ত্রের দেশে, ঔপন্যাসিক জঁ-পাত্রিক মোদিয়ানোর দেশে, চিত্রশিল্পী অঁরি মাতিসের দেশে, পোস্ট-ইমপ্রেশনিজম ধারার নেতৃস্থানীয় শিল্পী পল সেজানের দেশে, চিত্রশিল্পী ক্লোদ মোনের দেশে, উনিশ শতকের প্রখ্যাত চিত্রকর পল গোগাঁর দেশে, যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শিল্প-সাহিত্য চোখে পড়ে। শুরুতেই সিদ্ধান্ত নিলাম আইফেল টাওয়ার দেখবো। যেহেতু ফ্রান্সের প্রতীক হিসেবে সর্বমহলের দৃষ্টি কেড়েছে এই টাওয়ার এবং টাওয়ার হতে পুরো প্যারিস শহর এক পলকে দেখা যায়! সেইন নদীর সুবাসিত হাওয়া গায়ে মেখে লৌহদ্বারানির্মিত আশ্চর্যের কাঠামো দেখতে পরদিন সকালবেলা লাইনে দাঁড়ালাম। প্রাথমিক নিরাপত্তা বেষ্টনির কার্য সম্পাদন শেষে টিকিট কাউন্টারের দীর্ঘ সারিতে উৎসবের আমেজ। বিশ্বের নানা প্রান্ত হতে আসা নানান দেশের মানুষ একসঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছে, এ এক বিশ্ব ঐক্য-মৈত্রী-বন্ধনের অপূর্ব দৃশ্য। সহযোগিতার মনন নিয়ে সু-শৃঙ্খলভাবে সকলে এগিয়ে যাচ্ছে কাউন্টারের দিকে। সবার মুখে লেগে আছে তৃপ্তির হাসি। কোমল, শ্রুতিমধুর ভাষা হিসেবে ফরাসি ভাষার সুনাম পৃথিবীজুড়ে। খুব প্রয়োজন ছাড়া ফরাসিরা ইংরেজি ভাষা মুখেই আনতে চায় না। সঙ্গে থাকা ছোটভাই জাহিদ দুটো টাওয়ারে চড়ার টিকিট সংগ্রহ করলো। লিফটে চড়ে ধাপে ধাপে আইফেল টাওয়ারের চূড়ায় উঠে আসলাম।
শুরুতেই চোখ গেলো সেইন নদীর দিকে। এ নদী নিয়ে যুগ যুগ ধরে কতোশতো ছবি আঁকা হয়েছে তা বলা মুশকিল, বাঁধা হয়েছে অসংখ্য গান, পৃথিবীর কতো শিল্পীর তুলির প্রেরণা এই নদী। প্যারিস শহরের বুক চিরে বহমান শান্ত এ নদী ঘিরে রয়েছে কতোই না গল্প। তবে এ শান্ত নদীটি মাঝেমধ্যে এই শহরে বেশ অশান্তি সৃষ্টি করে! বিরামহীন স্রোত আতঙ্কিত করে তোলে নদীতীরের লোকজনদের। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে একটু ভারী বৃষ্টিপাত হলেই সেইন নদী ফুলেফেঁপে ওঠে। ভাসিয়ে দেয় আশপাশ। সাম্প্রতিক কালের মধ্যে ভয়াবহ বন্যায় প্যারিস আক্রান্ত হয় ২০০৩ সালে। ল্যুভর মিউজিয়াম নিকটবর্তী হওয়ায় বন্যার আশঙ্কায় প্রায় লক্ষাধিক শিল্পকর্ম নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছিলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ছিলো মিউজিয়ামে রাখা শিল্পের সবচেয়ে বড় স্থানান্তর। তাছাড়া প্যারিসের ভূগর্ভস্থ অনেকগুলো স্টোরেজ বন্যা জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতেও বন্যায় আক্রান্ত হয় প্যারিস। সরকারি হিসেবে জল যতই বাড়ুক, প্যারিসের মানুষ অপলকে তাকিয়ে থাকে সেইন নদীর উপর ব্রীজের মধ্যে থাকা একটি মূর্তির দিকে। ওই মূর্তিই বলে দেবে বন্যার হাল হকিকত। কতটা ডুবলো পঁ দে লা আলমা ব্রিজের নীচে দাঁড়িয়ে থাকা জোয়েডের মূর্তি, তার খোঁজখবর নেন ফরাসিরা। বৃষ্টির পরিমাণ একটু বেশি হলেই প্যারিসের লোকেরা তাকিয়ে থাকেন ৫.২ মিটার উঁচু ওই মূর্তির পায়ের দিকে। কতটা ডুবলো সেটা উপর নির্ভর করছে বন্যার পরিমাপ। ১৮৫৬ সালে প দে ল্য আলমা ব্রিজটি উদ্বোধন করেন তৃতীয় নেপোলিয়ন। আলমা যুদ্ধে রাশিয়ানদের হারিয়ে দিয়েছিলো ফরাসি আর ব্রিটিশ যৌথ বাহিনী। তারই স্মরণে ওই ব্রিজের নিচে তৈরি হয় ফরাসি গোলন্দাজ বাহিনীর জোয়েভ রেজিমেন্টের এক সেনার মূর্তি। ১৯১০ সালে জোয়েভের গলা পর্যন্ত ডুবে গিয়েছিলো। সেটাই ছিলো সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতি, তারপর সেইন নদীর ফুলে ওঠা জলে জোয়েভের মূর্তির পা ডুবেছে ১১ বার। ১৯২৪, ১৯৫৪, ১৯৫৫, ১৯৮২, ১৯৮৮, ১৯৯৫, ১৯৯৯, ২০০১, ২০১৩, ২০১৬ এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালে। সেইন নদীর জল বাড়তে শুরু করলে চার রকমের সতর্কতা জারি হয় প্যারিসে। যেমন পানির স্থর ৩.২০ মিটার হলে নদীর ধারের ফুটপাত বন্ধ হয়ে যায়, ৩.৪৫ হলে দুই ধারের ট্রাফিক বন্ধ হয়, ৪.৩০ হলে নৌবিহার বন্ধ হয়, ৬ মিটার হলে রেল টানেল বন্ধ হয়, ৬.১০ মিটার হলে দুদিকের সব রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় আর ৭.৩০ মিটার জল উঠলে আশপাশের ৬টি এলাকা জলমগ্ন হয়। প্যারিসের লোকজনের কাছে জোয়েভ মূর্তিটির বেশ গুরুত্ব রয়েছে। ফরাসিরা বিশ্বাস করে এ মূর্তিটি তাঁদের শহরের অতন্দ্র প্রহরী। সেইন নদী বন্যায় মাঝেমধ্যে কিছুটা ঝামেলায় ফেললেও অন্যান্য সময়গুলোতে এ নদীর মায়াময় জলরাশি সবাইকে প্রেমের ডোরে বাঁধে। বিকেল হলেই স্থানীয় লোকজন পৃথিবীর নানা প্রান্ত হতে আসা পর্যটকদের বিনোদনের যোগান দিতে এ নদী তীর ঘিরেই তাদের সকল প্রয়াস। প্যারিস শহরের অংশে ৩৭ টি এবং শহরের বাইরে আরো বিস্তৃত অনেকগুলো সেতু রয়েছে সেইন নদীর উপর। দুই পাশে আসা-যাওয়ার এই সেতুগুলো বেশ নান্দনিক নকশায় ভরপুর। অলংকৃত কাজগুলো দেখার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়। নদীর তীরে রয়েছে ছোট ছোট পার্ক। রয়েছে বসার ব্যবস্থা। নদীর রূপ বৈচিত্র্য উপভোগের এ আয়োজন অসাধারণ।
প্রাচীন বৃহৎ এ শহরের নাভিমূলে আপন সুখে গান গেয়ে একেবেঁকে প্রবাহমান সেইন নদীকে দেখলে মনে হয় চারপাশের সমস্ত গ্লানি ধুইয়ে দিচ্ছে তার শান্ত ঢেউয়ে ঢেউয়ে। পবিত্রতায় ভরিয়ে তুলছে আশপাশ। টাওয়ারের উপর হতে মধুময় এ দৃশ্যগুলো খুবই উপভোগ্য। সেইন নদীর পাশের বাঁধানো রাস্তায় সেতুর উপরে পর্যটকের ব্যাপক আনাগোনা। প্রিয় মানুষের হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে তৈরি হচ্ছে অজস্র স্মৃতি। পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষের প্রেমময় মুহূর্তগুলোর স্মৃতি কেবল জমিয়েই যাচ্ছে এই নদী তীর । ফ্রান্সের অন্যতম দীর্ঘ এই নদীটি লে হান্দ্রে (Le Havre) এর কাছে গিয়ে ইংলিশ চ্যানেলের সঙ্গে মিশেছে। সেইন (La Seine) নদীটি পূর্ব-মধ্য ফ্রান্সের নির্জো শহরের কাছে লঁগ্ন মালভূমিতে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে রোয়া, ফোডেনব্রো, প্যারিস এবং রুঅঁ শহরগুলোর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ইংলিশ চ্যানেলে পতিত হয়েছে। প্রাচীনকালে নদীটি সেকুয়ানা নামে পরিচিত ছিলো।
সেইন নদীর মোহনাটি প্রায় ১০ কিলোমিটার প্রশস্ত এবং এটির দুপাশে ল্য আভ্ এবং উঁরুর বন্দর শহরগুলো অবস্থিত। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য ৭৭৬ কিলোমিটার। মোহনা থেকে ৫৬০ কিলোমিটার উজানে বার-সুর-সেন শহর পর্যন্ত নদীটি নৌপরিবহনের উপযোগী। এছাড়া সমুদ্রগামী জাহাজগুলো মোহনা থেকে ১২১ কিলোমিটার উজানে রুঅঁ শহর পর্যন্ত যেতে পারে। সেইন নদীর অববাহিকার আয়তন প্রায় ৭৭,৭০০ বর্গকিলোমিটার। উত্তর থেকে ওব, মার্ন, ওয়াজ এবং দক্ষিণ দিক থেকে ইয়োন ও ওর উপনদীগুলো সেইন নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এছাড়া নদীটি খালের মাধ্যমে এস্কো বা শেল্ডে, মোজ, রাইন, সোন এবং লোয়ার নদীর সাথে যুক্ত।
বাণিজ্য ও পরিবহনের ক্ষেত্রে এই নদীর ভূমিকা অনন্য। মূলত এ নদী ঘিরেই গড়ে ওঠে প্যারিস শহর। যদিও এখন আকাশপথে ব্যবসার জয়জয়কার তারপরও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এই নদী ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। বিশ্ব পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু এখনও সেইন নদী। শান্ত এ নদীর পাশে কাটানো সময়গুলো স্মারক হিসেবে অনেকে কাছে বেশ দামী। নদীর বুকে নৌকা ট্যুর অনেক জনপ্রিয় একটি ইভেন্ট। অজস্র ট্যুর অপারেটর নানা ধরনের প্যাকেজ সেবা দিয়ে যাচ্ছে পর্যটকদের। ভাসমান রেস্তোরাঁ, ডিস্কো, ক্যাফে রয়েছে। ভ্রমণকারীরা তাদের ইচ্ছামতো অর্থের বিনিময়ে উপভোগ করতে পারছে পরিবেশিত সুবিধাগুলো। নদীকে অনুভব করার সর্বোত্তম উপায় অবশ্যই নৌকা ভ্রমণ। আর সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে ঘুরতে আসা অনেকেই। নদী ঘিরে প্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে নিত্যনতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে পর্যটকের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ ।
ইউরোপের একমাত্র কৃত্রিম ‘সমুদ্র সৈকত’ তৈরি হচ্ছে সেইন নদী তীরে। প্যারিস বীচ তৈরি করতে হাজার হাজার টন বালি এবং পূর্ণ আকারের খেজুর গাছ, সৈকতে বসার চেয়ার ও লাউঞ্জ সহ বিনোদনের সর্বপ্রকার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এই নদী ঘিরে রয়েছে মানুষের বিশ্বাস। সেইন নদীর উপর ‘পঁ দে আর্টস’ সেতুতে ‘প্রেম তালা’ লাগিয়ে চাবি নদীতে ছুঁড়ে ফেলে দিলে প্রেমিক যুগল বিশ্বাস করে তাদের প্রেম ভেঙ্গে যাবে না। শুধু ফরাসি নয়, বিদেশী পর্যটকদের মধ্যেও এটা তুমুল জনপ্রিয়। সম্প্রতি ভালোবাসার তালা নিষিদ্ধের জন্য ‘নো লাভ লকস’ প্রচারাভিযানের ফলে কর্তৃপক্ষ এটি বন্ধের উদ্যোগ নেয়। ভালোবাসাকে চির অটুট রাখতে এই বিশ্বাসের প্রথা খুব সহজে নিঃশেষ হয়ে যাবে না কিছু কিছু জায়গায় তা লক্ষ্য করা যায়। ভালোবাসার তালা ঝুলানোর একটু সুযোগ যেখানে আছে সেখানেই প্রেমিকযুগল তাদের তালা ঝুলানো ভালোবাসার স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছে! প্যারিস শহরটা শুধু চোখ দিয়ে দেখার নয় এটা অনুভবেরও। সব কিছুতেই আপনি সহজ শিল্পের ছোঁয়া পাবেন। শিল্প ও সংস্কৃতির তীর্থভূমি প্যারিস সর্বপ্রথম রাস্তার ধারে বৈদ্যুতিক বাতি লাগিয়ে সিটি অব লাইট ‘City of light’ খেতাব পেয়েছিলো। এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের সংমিশ্রণ ঘটায় এই শহরের প্রকৃত লোকগুলোকে আলাদা করা দায়। তবে ফরাসিদের সঙ্গে মিশতে পারলে আসল জিনিসগুলো চেনা যায়। স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত পুরনো ভবনগুলো খুবই দৃষ্টিনন্দন, আকর্ষণীয়। সবুজ নগরী গড়ার একটা প্রয়াস রয়েছে কর্তৃপক্ষের, একটু দৃষ্টি দিলেই তা খুব সহজে বোঝা যায়। নগর পরিকল্পনায় রয়েছে ঐতিহ্যকে লালন এবং আধুনিকতাকে গ্রহণ। দুটোর সমন্বয় শৈল্পিক উপায়ে পরিচালনা করছেন নগর পরিকল্পনাবিদগণ। পাথরের তৈরি নান্দনিক ভাস্কর্যগুলো প্যারিসের শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুন। শহরের যেকোনো জায়গা থেকে আপনি দেখতে পারবেন আইফেল টাওয়ারটিকে। না হয় আইফেল টাওয়ারটি হয়তো তাকিয়ে থাকবে আপনার দিকে। এ নিয়ে অনেক মজার মজার গল্প আছে। তবে এ গল্পটি একটু ভিন্ন। বিখ্যাত ফরাসি এক লেখক নাকি আইফেল টাওয়ারকে একদম পছন্দ করতেন না। অথচ তিনি নিয়মিত আইফেল টাওয়ারের রেস্টুরেন্টে খাওয়ার জন্য যেতেন। সেই বিষয়ে উনার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, “প্যারিসে ওই একটি জায়গাই আছে যেখান থেকে আইফেল টাওয়ার দেখা যায় না, তাই রোজ আসি।”